Tinchuley – Offbeat Destination of Darjeeling

        গরমে নাভিশ্বাস। চারিদিকে দেখছেন সবাই ঘুরতে যাচ্ছে। আপনার মন হচ্ছে ঘুরে আসি কোথাও। কিন্তু স্ট্যাটাসে সবার ছবি বন্যা দেখে ভাবছেন সবজায়গায় লোক গিজগিজ করছে। একটু নিরালায় যেতে চাইছে মন। এমন কোথাও ওফ বিট জায়গা পড়ে আছে কি আপনার জন্য। – আছে তো। সেসবের জন্য আমরা এসেছি এখানে। আজকে আমাদের গন্তব্য ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম – তিনচুলে। শিলিগুড়ি সেবক রোডের গা বেয়ে গাড়ি করে আপনি তিনচুলেতে পৌঁছাতে পারবেন।

তাহলে কি করে যাবেন এই মনোরম পরিবেশে?

শিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়িতে ৩ ঘণ্টায় তিনচুলে পৌঁছাতে পারবেন ঠিক, কিন্তু পথের আঁকাবাঁকা মোড়ে থাকা বিভিন্ন রত্ন মিস করবেন।

তাহলে কি করবেন?

চার হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি বুক করে ঘুরতে ঘুরতে তিনচুলে যেতে পারেন। রাস্তায় দেখে নেবেন বহু সাইটসিন।

তিনচুলে তে কোথায় থাকবেন?

ছোট্ট এই পাহাড়ি গ্রামে খুব বেশি অপশন পাবেন না, অল্প কিছু হোম স্টে আছে। আমরা ছিলাম জাম্পালা হোম স্টে তে খুব সুন্দর ও ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন একটি জায়গা। থাকা খাওয়া 1500 করে পড়বে।

কদিন থাকবেন?

এক রাত দুদিনের জন্য তিনচুলে একদম পারফেক্ট। তবে চাইলে আপনি আরো কিছুদিন থেকে এদিক ওদিক ঘুরতে পারেন।

কখন যাবেন?

বছরের যেকোনো সময় যেতে পারেন তবে আদর্শ সময় অক্টোবর থেকে জুন।

        আমাদের পথ চলা শুরু হলো শিলিগুড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে। সেখান থেকে গাড়িতে করে গেলাম সেবক বা করোনেশন ব্রিজ। ছোট্ট এক টুকরো বিদেশের অনুভূতি জাগায়। সেখান থেকে এলাম ত্রিবেণী সঙ্গমে। যেখানে প্রেমী যুগল অর্থাৎ রঙ্গিত ও তিস্তা মিলিত হয়। শীতকালে এই দৃশ্য আরো অনবদ্য লাগে। মন হারিয়ে যায়। এখানে রয়েছে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস যেমন রিভার রাফটিং ইত্যাদি। এখানে টেন্ট রয়েছে যেখানে আপনি সম্পুর্ণ দিন কাটাতে পারেন, প্রকৃতির বুকে নদীর পাশে। তাই মাত্র ১৫০০ টাকায়। এখানে দুই নদীর সঙ্গম স্থল দেখলাম কাছ থেকে কিন্তু আরো একটু দুর্দান্ত ভিউ পাবার আশায় চলে এলাম লাভারস মিট ভিউ পয়েন্ট-এ। সেখান থেকে আমরা এলাম লামাহাটা তে। লামাহাতা তে একটি ইকো ট্যুরিজম পার্ক রয়েছে । এখনকার ওয়াচ টাওয়ার থেকে চারিপাশ পাখির চোখে দেখতে তো পারেন এবং মূল আকর্ষণ কাঞ্চনজঙ্ঘা। পার্কটির গাছ, ফুলে ভর্তি এবং এখনকার রাস্তা বেয়ে ৭৫০ মিটার ট্রেক করে ওপরে স্যাক্রিড লেক দেখে নিতে পারেন। অনবদ্য অনুভূতি। এখান থেকে ফিরে তিনচুলে যাওয়ার পথে গুম্বাদারা ভিউ পয়েন্ট থেকে টি গার্ডেন এর একটা সামগ্রিক ভিউ দেখলাম ,আপনারা চাইলে গুম্বাদারা কেভ ও ঘুরে নিতে পারেন। এবার হোম স্টে তে এসে চেক ইন করে জানালা বা ব্যালকোনি দিয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করলাম। আপনি চাইলে সন্ধ্যাতে বনফায়ারে এর মজা নিতে পারেন।
        পরের দিন সকালে চেক আউট করে বেড়িয়ে পড়লাম তাগদা এর উদ্দেশ্য। তাগদা অর্কিড সেন্টার আমাদের গন্তব্যস্থল সেখানে দেখতে পাবেন প্রায় ষাট এর বেশি অর্কিড প্রজাতি। কিছু মেডিসিন্যাল উদ্ভিদও রয়েছে। মোটের উপর ভালই লাগবে শীতকালে গেলে আরো মজা পাবেন। ফেরার পথে পাইন আর চা বাগানের আমেজ মন মাতিয়ে দেয়। সুযোগ পেলে ফটো সেশন সেরে ফেলতে পারেন।
        আজকের শেষ গন্তব্য স্থল রংলিওট এ অবস্থিত তিস্তা ভ্যালী টি গার্ডেন। এটি এখনকার সবচেয়ে বড় গার্ডেন। এই সবুজ গালিচা মোড়া পাহাড় এ ট্রেক করতে পারেন ও চারিদিকে সুন্দর দৃশ্যবন্দী করতে পারেন।
শিলিগুড়ি পৌঁছে ট্রেন ধরে যাত্রার পরিসমাপ্তি। আপনারা তাহলে দেরি করবেন না ব্যাগ গুছিয়ে নিন। ধন্যবাদ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *