Mayapur – The Devoted Place of Eastern Part of India

বন্ধুরা আজ রয়েছে অন্য ধরনের একটি ব্লগ। সাধারণত আমাদের চেষ্টা থাকে যাতে আপনারা স্বল্প বাজেটে ভালো ভাবে ঘুরতে পারেন বিশেষত পাহাড় ও সমুদ্র। আজকে আমরা এসেছি আপনাকে ভক্তি প্লাবনে স্নাত করতে। হ্যা অবশ্যই আপনার বাজেট সাধ্য। আপনি পরিবারের সকল কে নিয়ে আসতে পারবেন। আজকে আমাদের বিষয় মায়াপুর।
নবদ্বীপে শচীমাতার পুত্র নিমাই এর জন্মস্থান। আর তার পাশেই আছে মায়াপুর যেখানে কৃষ্ণ ভক্তের সমাগম স্থান সে দেশি হোক বা বিদেশি।

কখন মায়াপুর যাবেন?

আপনি যেকোনো সময় যেতে পারেন। তবে বাড়তি আনন্দ ও দর্শনীয় পাবেন যদি রাস উৎসব, জন্মাষ্টমী, রথ যাত্রা বিভিন্ন উৎসবে যান। শীতকালের মিঠে রোদ্দুর গায়ে মেখে ঘুরে আসতে পারবেন।

কিভাবে মায়াপুর যাবেন?

মায়াপুর যাওয়ার বিভিন্ন উপায় আছে। আপনি শিয়ালদা থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জার বা কৃষ্ণনগর লোকাল ট্রেনে চেপে যেতে পারেন। এছাড়া হাওড়া থেকে সোজা কাটোয়া এর ট্রেন ধরে সেখান থেকে নবদ্বীপ ধাম যেতে পারেন।
আমরা কৃষ্ণনগর এ নেমে অটো করে ফেরি ঘাট গেছিলাম সেখান থেকে ফেরি করে জলঙ্গী নদী পেরিয়ে পুণ্যভূমি মায়াপুর পৌছালাম। জলঙ্গি ও হুগলি নদীর মেলবন্ধন এখানকার অনন্য রূপ। ঘাঁটে নেমে সেখানে টোটো রিজার্ভ করে সবটা ঘুরে দেখবো ঠিক হলো।

প্রথমেই গেলাম শ্রী শ্রী জগন্নাথ গৌড় সুন্দর রাধা দামোদর গিরিধারি মন্দির। অতীব সুন্দর মন্দির তবে ক্যামেরার ব্যবহার নিষিদ্ধ। তারপর গেলাম মায়াপুর সারস্বত গৌড়ীয় শ্রমণ আশ্রম। এখানে ও জগন্নাথ দেবের বাসস্থান। এরপর গেলাম শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান । এখানে শচি মাতার কোল আলো করে এসে ছিলেন নিমাই। প্রাণ জুড়িয়ে যাবে আপনার। তারপর এলাম শ্রী গৌড় গদাধর ও লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির। চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান এর কাছেই এটি অবস্থিত। শ্রীবাস ও গদাধর অঙ্গন একে একে দর্শন করলাম খুবই মনোরম। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মঠ এ তার জীবন বৃত্তান্ত, ধর্ম প্রচার সমন্ধে বিশদে বলা রয়েছে। চৈতন্য মিউজিয়াম এ অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন।
অবশেষে এসে পৌঁছলাম মায়াপুর চন্দ্রদয়া মন্দির বা ইসকন মন্দিরে। বলা বাহুল্য দুপুর ১২-৩.৩০ সকল মন্দির বন্ধ থাকে – নাড়ু গোপালের বিশ্রাম নেন কিনা।
আমরা ইসকন মন্দিরে ভোগ খাবো ঠিক করেই রেখেছিলাম। এখানে রান্নার তলিকা অনুযায়ী কুপন সংগ্রহ করতে হয়। যে কুপনটি কাটবেন তার নির্ধারণ করা ভবনে গিয়ে প্রসাদ খেতে হবে। হেঁটে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট ভবনে গিয়ে প্রসাদ খেলাম। সে কি অপূর্ব স্বাদ।
এই মুহূর্তে এখানে ইসকন এর বৃহত্তম মন্দির তৈরি হচ্ছে। সেই মন্দির ও যে নয়নাভিরাম বলার অপেক্ষা রাখেনা। চোখে পড়লো মায়াপুর ডোম থিয়েটার হল। এখানে গিয়ে সিনেমা দেখতে পারবেন। অনেক টা বিড়লা প্ল্যানেটরিয়াম এর আদলে।
সবশেষে এলাম শ্রীল প্রভুপাদ এর পুষ্প সমাধি সৌধ দর্শনে। এই স্থান বেশ সুন্দর। শ্রী রাধা মাধব মন্দির যেটি ইস্কনের আসল মন্দির সেখানে কৃষ্ণ আরতি দেখলাম। মন্দির প্রাঙ্গণে কৃষ্ণনাম হচ্ছিল হরি প্রেমে মাতোয়ারা বিদেশিনী, সাধারণ পর্যটক এমনকি আমরাই নাচতে আরম্ভ করলাম উন্মাদ হয়ে। স্থান, কাল, পাত্র এর বিভেদ ভুলে সবাই হরির চরণ আশ্রিত।
৫০০ টাকার মধ্যেই এই ভ্রমণ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসী হলে অবশ্যই একবার এখানে আসবেন। ভালো থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *