Mirik – The Unbeaten Beauty of Darjeeling Hills

প্রবল গ্রীষ্মের খরতাপে প্রাণ অতিষ্ঠ। কিন্তু অফিস তো আর টা মানে না। প্রাণ আঁকুপাঁকু করছে একটু ঘুরে আসার জন্য হালকা করে। পয়লা বৈশাখ শেষে পকেট ও গড়ের মাঠ। উপায় কি তবে? উপায় আমি বাতলাচ্ছি।
আপনাদের জন্য একটি ভ্রমণ কেন্দ্র নিয়ে এসেছি যা আপনি একরাত ও দুদিনের মধ্যে ঘুরে নিতে পারবেন। এবং খরচ ও আয়ত্তে থাকবে। যদিও এর আশেপাশের স্থান নিয়ে বিস্তারিত একটি ব্লগ হবে। আজকের শুধুই মিরিক নিয়ে। স্থানীয় লেপচা ভাষায় মিরিক নামের অর্থ আগুনে পোড়া স্থান। আমাদের সমতল ভূমির বাসিন্দা দের জন্য মুক্তির স্থান এই প্রবল দাবদাহ থেকে।
মিরিক আসতে হলে আপনি যেখানেই থাকুন ট্রেন ধরে শিলিগুড়ি আসতে হবে। (শিলিগুড়ি নিয়ে আমাদের ব্লগটি দেখেছেন তো? নয়তো পস্তাতে হবে) সেখান থেকে গাড়ি বা বাসে করে মিরিক আসতে পারেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা মত সময় লাগবে। এই সময়ে দেখবেন নদী ব্রিজ, আঁকাবাঁকা পথ, সবুজ বনানী দেখেই কখন পার হয়ে যাবে ধরতেই পারবেন না।
আমরা হোটেল ছিলাম মিরিকের নতুন রিসোর্ট আমাইরা রিসোর্টে। খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও যত্নবান 4 Star প্রোপার্টি।
হোটেল এর কাছে হাঁটা পথে মিরিক লেক। আর এখানেই রয়েছে স্থানীয় ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। এখন থেকে গাড়ি ভাড়া করলাম কথা হলো মিরিকের সাইটসিয়িং করাবার, ভাড়া লাগলো ২৩০০ টাকা। তিনি আমাদের দেখবেন গোপালধারা টি গার্ডেন, সীমানা ভিউ পয়েন্ট, টিমলিং ভিউ পয়েন্ট, সুইস কটেজে ও জোরপখরি।
আমাদের ভ্রমণ শুরু হলো গোপালধারা টি এস্টেট দিয়ে। এটি মিরিকের সব থেকে পপুলার ও বড় চা বাগান। দার্জিলিং চা বলে আমরা যা জানি তা আসলে এদিক থেকেই রপ্তানি হয়। চা বাগান এর যে নিজস্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্য আছে তার তো কথাই নেই। উপরন্তু সমগ্র এলাকা টা এতো সুন্দর ভাবে দেখা গেল সবুজের সমারোহ। আপনারা এখন থেকে চা কিনতে পারেন তবে এর সাথে বাজার চলতি চা পাতা মেশাতে হবে ভালো স্বাদ এর জন্য।
এরপর রওনা দিলাম সীমানা ভিউ পয়েন্ট এর দিকে। রাস্তায় পড়ল পশুপতি মার্কেট। আপনি আইডি দেখিয়ে এখন থেকে নেপাল বর্ডার এ প্রবেশ করতে পারেন। আমরা আর যায়নি। এখান থেকে সীমানা ভিউ পয়েন্ট আমরা যখন গেলাম মেঘে ঢেকে গেছিলো। কিন্তু এখন থেকে নেপাল বর্ডার ও পাহাড় চূড়ায় বাহার দেখা যায়। স্থানীয় কিছু দোকান ও ফুলের বাগান রয়েছে। এখান থেকে লেপচজগত হয়ে দার্জিলিং যাওয়া যায় ।
আমরা গেলাম জোরপখরি এর পথে পাইন বনের ছায়ায়, আলো রোদ্দুরের মায়ায় । জোরপখরি তে রয়েছে লেক, পাইন বন আর ফুলের বাগান। এখানে বেশ কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে। এখান থেকে ফেরার পথে আবার সীমানা ভিউ পয়েন্ট গেলাম । এবার কিন্তু হতাশ হলাম না। কি অসাধারণ দৃশ্যপট।
এখান থেকে আমরা এগোলাম অন্য দিকে – টিমলিং ভিউ পয়েন্ট যাওয়ার আগে সুইস কটেজে গেলাম। ১০ টাকা এন্ট্রি ফি দিয়ে যেনো সুইজারল্যান্ড চলে এলাম। সেখানকার আদলে তৈরি কটেজে গুলিতে আপনি থাকতেই পারেন। প্রায় হাজার পাঁচেক টাকার বিনিময়ে। আর মোহময়ী দৃশ্য ফ্রি। টিমলিং ভিউ পয়েন্ট মিরিক থেকে সাত কিলোমিটার নিচে। সবুজ গালিচা মোড়া পাহাড় আর নীল আকাশে সাদা মেঘের লুকোচুরি। ক্যামেরা বন্দি করে রাখলেও এই সৌন্দর্য্য এর প্রতি সুবিচার করা সম্ভব না। সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখে নিলাম চেইনদারা, অমাইক পাইন বনে ঘেরা এই সুন্দর টি-এস্টেট। এগুলি দেখে আমরা ফিরলাম শিলিগুড়ি বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে। আজকের মত মিরিক ট্যুরের গল্প এখানেই শেষ হলো।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *